ভিশন বাংলা ডেস্ক: যেন অসম্ভবকে সম্ভব করলেন আম্বতি রাইডু ও মহেন্দ্র সিং ধোনি। বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙালুরুর বিপক্ষে ২০৬ রানের লক্ষ্য তারা করে ম্যাচ জিতল ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। রাইডু ৫৩ বলে করলেন ৮২ রান। ধোনি ৩৪ বলে অপরাজিত ৭০। ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করলেন ৩৬ বছর বয়সেও অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করে চলা ভারতের সাবেক অধিনায়ক। ৫ উইকেটে এদিন ম্যাচ জিতল চেন্নাই।
বেঙালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে এদিন টস হেরে আগে ব্যাটিং পায় স্বাগতিক দল। দুই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি কক ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ২০৫ রান করে বেঙালুরু। জবাবে ৯ ওভারে ৭৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল চেন্নাই। সেই ম্যাচ দুর্দান্তভাবে ২ বল হাতে রেখে শেষ করে দলটি।
রাইডু আর ধোনির পঞ্চম উইকেট জুটিই চেন্নাইয়ের জয়ের ভিত তৈরি করে। ১০১ রান আসে এই জুটিতে। তারপরও চেন্নাইয়ের পক্ষে বাজি ধরতে ভয় ছিল অনেকের। শেষ তিন ওভারে ৪৫ রানের সমীকরণ দাঁড়ায় দলটির। কোরি অ্যান্ডারসনের ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে একটা ছক্কা মারেন ধোনি। চতুর্থ বলে চার হাঁকালেন রাইডু। কিন্তু পরের বলেই রান আউটের শিকার হয়ে ফিরে গেলেন ৩২ বয়সী ব্যাটসম্যান। ৫৩ বলে ৮২ রান করতে ৮টি ছক্কা ও ৩টি চার হাঁকিয়েছেন তিনি। এরপর নাটকের শেষ দৃশ্যে ধোনির সঙ্গে যোগ দেন ব্রাভো।
গ্যালরি ভরা উত্তেজনা। টেলিভিশন ক্যামারা দর্শকদের নানা অভিব্যক্তিভরা মুখ ধারণ করছে ক্ষণে ক্ষণে। হতাশার চাদরে ঢেকে পড়া আনুশকা শর্মাও ধরা পড়ছিলেন বারবার। বিষন্ন স্ত্রীকে দেখে ক্রিকেট রোমান্টিকেরও মন খারাপ হলো তখন। অন্যদিকে মিসেস ধোনি যে ছিলেন উৎফুল্ল। স্বামীর ব্যাটিং যেন প্রাণ ভরে উপভোগ করলেন তিনি। আরেকবার দেখলেন তারুণ্যে ফিরে গিয়ে ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করে আসছেন মিস্টার কুল।
১৯তম ওভারটা মোহাম্মদ সিরাজ করেলেন ভালো-মন্দের মিশেলে। চেন্নাইয়ের তখন ১২ বলে ৩০ রানের সমীকরণ। প্রথম চার বলে রান দিলেন মাত্র ৩টি। কিন্তু পঞ্চম বলে ধোনি হাঁকালেন ছক্কা। এরপর টানা তিনটি ওয়াইড দিয়ে যেন ডুবিয়ে দিলেন সিরাজ। শেষ বলে এলো ২ রান। তাতে শেষ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণ দাঁড়ালো চেন্নাইয়ের। কোরি অ্যান্ডারসনের প্রথম বলে চার হাঁকালেন ব্রাভো। পরের বলে বিশাল ছক্কা। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক দিলেন ধোনিকে। আর ধোনি ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালের মতো ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করলেন। ৩৭ বলের ইনিংসে ৭টি ছক্কাই হাঁকিয়েছেন ধোনি। চার মেরেছেন ১টি। ব্রাভো অপরাজিত ছিলেন ১৪ রানে।
দুই ইনিংস মিলে এ ম্যাচে ছক্কা হয়েছে ৩৩টি। বেঙালুরুর পক্ষে এ ম্যাচে সর্বোচ্চ ২ উইকেট চাহালের। এর আগে ডি কক ও ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটে বড় সংগ্রহ গড়ে চেন্নাই। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুই স্বদেশি গড়েন ১০৩ রানের জুটি। তাতেই বড় স্কোরের ভিত গড়ে বেঙালুরু। ডি কক ৩৭ বলে ৪ ছক্কা ও ১ চারে ৫৩ রান সংগ্রহ করেন।
ডি ভিলিয়ার্স ৩০ বলে ৮ ছক্কা ও ২ চারে ৬৮ রান করেন। এছাড়া ৩২ রান এসেছে মানদিপ সিংয়ের ব্যাট থেকে। তবে শেষ ৭ বলে চার উইকেট হারিয়েছে বেঙালুরু। ফলে রানটা আরো বেশি হওয়ার সুযোগ থাকলেও তা হয়নি। চেন্নাইয়ের পক্ষে শার্দুল ঠাকুর, ইমরান তাহির ও ডোয়াইন ব্রাভো নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। ম্যাচ সেরা হয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। এই জয়ে পয়েন্ট টেবেলির শীর্ষে উঠে গেল চেন্নাই।